দুর্গা পূজা কবে
প্রতিবছর আমরা সবচেয়ে বেশি যেটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি তা হলো দূর্গাপূজা।এই একটা দিনের জন্য পুরা একবছর অপেক্ষা করা লাগে তারপর আসে সেই কাঙ্ক্ষিত দিন আর শেষ হয় সকলের অপেক্ষার প্রহর।আবারো দেখা হয় সকলের প্রিয় দেবী মা দূর্গার সাথে।
আমরা প্রতেক বছর দুর্গা পূজা পালন করে থাকি।এবারো দূর্গা পূজা আমাদের খুব নিকটে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সম্পর্কে বিস্তারিত।
বাংলা মাসের কত তারিখে দুর্গা পুজো ২০২৪
বাংলা মাসের কত তারিখে দুর্গাপূজা ২০২৪-ইংরেজি মাসের ৯ ই অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের দুর্গা পূজো শুরু হবে যা আশ্বিন মাসের 24 তারিখ থেকে ইংরেজি মাসের ১৩ ই অক্টোবর পর্যন্ত যা বাংলা আশ্বিন মাসের ২৮ তারিখ। ৯ই অক্টোবরে মহাষষ্ঠী এবং ১৩ ই অক্টোবর দশমী পুজো হবে।
দুর্গা পূজা কতদিন ধরে হয়
দুর্গা পূজা কতদিন ধরে হয় -দুর্গা পূজা সাধারণত ১০ দিন ধরে হয়। যদিও মেইন পূজা মহাষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত।মহালয়ার পর থেকে দূর্গা পূজার শুরু হয়ে যায়। তবে সকলকেই বেশির ভাগ ষষ্ঠী,মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহা নবমী,দশমী পালন করে থাকে। দুর্গা পূজা সাধারণত ৫ দিন ধরে উদ্যাপিত হয়, যা ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে। তবে, এর আগে মহালয়া দিয়ে পূজার সূচনা হয়, যা দেবী দুর্গার আগমনের বার্তা দেয়। পূজার দিনগুলো হলো:
1. ষষ্ঠী: দেবীর বোধন বা আমন্ত্রণ
2. সপ্তমী: দেবীর পূজা ও নবপত্রিকা স্থাপন।
3. অষ্টমী: কুমারী পূজা এবং সন্ধিপূজা।
4. নবমী: মহা নবমী পূজা এবং হোম বা যজ্ঞ।
5. দশমী: বিজয়া দশমী, দেবী দুর্গার বিসর্জন ও বিদায়।
মহালয়া কি এবং কেন পালন করা হয়
মহালয়া কি এবং কেন জানতে সম্পূর্ণ পড়ুন। প্রয়াত আত্মাদের সংঘটিত সমাবেশকে মহালয় বলা হয়। মহালয় থেকে মহালয়ার সৃষ্টি হয়। এই দিন অমবস্যা সমাপ্ত হয় আর পূর্ণিমার শুরু হয়।দূর্গাপূজার সূচনায় হয় মহালয়া থেকে। সকলে মানে এই দিনে দেবী দূর্গা পৃথিবীতে আসেন।মহালয়া হিন্দু ধর্মের একটি বিশেষ দিন, যা দেবী দুর্গার আগমনের সূচনা হিসাবে উদ্যাপিত হয়। এটি দুর্গা পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সাধারণত দুর্গা পূজার আগে অমাবস্যার দিনে পালন করা হয়। মহালয়ার মূল ধারণা হলো, এই দিনে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আহ্বান জানানো হয়, এবং এই দিন থেকেই দুর্গা পূজার মূল প্রস্তুতি শুরু হয়।
1. দেবী দুর্গার আগমন: মহালয়ার দিন থেকেই মনে করা হয়, দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আগমন করছেন। দেবীর আগমনকে ঘিরে সারা বাংলায় পূজার পরিবেশ তৈরি হয়।
2. তর্পণ অনুষ্ঠান: মহালয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তর্পণ, যেখানে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে গঙ্গা বা কোনো পবিত্র নদীতে তাদের উদ্দেশ্যে জল অর্পণ করা হয়। এতে প্রয়াত আত্মাদের শান্তি কামনা করা হয়।
3. চণ্ডীপাঠ: মহালয়ার দিনে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গার বীরত্ব এবং মহিষাসুরের বিনাশের কাহিনী বলা হয়, যা "চণ্ডীপাঠ" নামে পরিচিত। এটি রেডিও বা টেলিভিশনে প্রচারিত হয় এবং বাঙালিদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়।
মহালয়া পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো, দেবী দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো এবং তাঁর আবির্ভাবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। একইসাথে, এটি পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করার একটি দিন হিসেবে পালন করা হয়।
২০২৪ এর মহালয়া কবে থেকে শুরু
২০২৪ এর মহালয়া কবে থেকে শুরু? এই বছর আশ্বিন মাসের ১৬ তারিখ (ইংরেজী মাসের ১ লা অক্টোবর মঙ্গলবার ) রাত ০৯:৩৯ মিনিট অমবস্যা শুরু হয় এবং শেষ হবে ১৮ তারিখ (ইংরেজী মাসের ৩ রা অক্টোবর বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২:১৮ তে শেষ হবে। ২০২৪ এর মহালয়া ২ ই অক্টোবর হবে আর এর ঠিক ৭ দিন পর দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
2024 সালে মা দুর্গার আগমন কেমন হবে
2024 সালে মা দুর্গার আগমন কেমন হবে- 2024 সালে মা দুর্গার আগমন কেমন হবে তা নির্ভর করছে তার বাহনের উপর। হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার আগমন ও যাতায়াতের বাহনের, উপর নির্ভর করে গোটা বছরটা পৃথিবীবাসীর কেমন কাটবে। ২০২৪ সালে দেবী দূর্গার আগমন হবে পালকিতে আর বিদায় হবে হাতি করে।
মা দূর্গার বিভিন্ন বাহন গুলো
মা দূর্গার বিভিন্ন বাহন গুলো নির্ভর করে সপ্তাহের বারের উপর।হিন্দু শাস্তের মতে, রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে হাতি।আর যদি শনি, মঙ্গলবার হয় তাহলে দেবীর বাহন অশ্ব বা ঘোড়া হবে।বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা হয়।এছাড়া বৃহস্পতিবার, শুক্রবার হলে দেবীর বাহন হবে দোলা বা পালকি। এবার যেহেতু ১৩ ই অক্টোবর রবিবার দশমী তাই মা দূর্গার বাহন এবার হবে গজ বা হাতি। তিনি এবার সবার থেকে বিদায় নিবেন হাতিতে।
মা দূর্গার বিভিন্ন বাহন গুলোর ফলাফল জানুন
- দূর্গা পালকিতে আসলে দোলায়াং মকরং ভবেৎ" অর্থাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ ও অতিমৃত্যু হয়। যাতে প্রচুর পরিমানে প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকে।
- দেবী যদি গজ বা হাতিতে ফিরেন, তবে শাস্ত্র অনুযায়ী হবে দেবীর সবচেয়ে উৎকৃষ্টতম বাহন। দেবীর আগমন বা গমন হাতিতে হলে মর্ত্যলোকে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধিত বিরাজ করে। পূর্ণ হয়ে যায় সকল ভক্তদের মনোবাঞ্ছা ও সকলের মধ্যে তৃপ্তি লক্ষ্য করা যায়। পরিশ্রমের সুফল পায় মর্তলোকের অধিবাসীগণ। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টির সৃষ্টি হয় না , ঠিক যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটাই বর্ষণ হয়ে থাকে ।
- দেবী যদি ঘোড়ায় চড়ে আগমন করেন বা গমন হন তাহলে তার ফল হবে "ছত্র ভঙ্গ স্তুরঙ্গমে" অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে পারে, রাজায়-রাজায় বা রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে যুদ্ধের সৃষ্টি হয়। সমাজে বিভিন্ন রকম সামাজিক ও রাজনৈতিক ধ্বংস ও অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাবে।
- দেবীর আসা বা যাওয়া নৌকায় হলে ফল "শস্য বুদ্ধিস্তথাজলম" অর্থাৎ প্রবল বন্যা ও খরা দেখা দিতে পারে। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া শুরু হয়। জগৎ হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলায় ভরপুর । কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা দিতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url